ঢাকা , বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাধারণ মানুষ জিম্মি মিরপুর বিআরটিএ

রাকিবের অনিয়ম দুর্নীতির আখড়া সাধারণ মানুষ জিম্মি মিরপুর বিআরটিএ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০৭:১১:১৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-১১-২০২৫ ০৭:১১:১৫ অপরাহ্ন
রাকিবের অনিয়ম দুর্নীতির আখড়া সাধারণ মানুষ জিম্মি মিরপুর বিআরটিএ রাকিবর
 রাকিবের অনিয়ম দুর্নীতির আখড়া সাধারণ মানুষ জিম্মি মিরপুর বিআরটিএ
ঢাকার মিরপুর এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), মেট্রো-১ সার্কেল-১৩-এর অফিসে সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক অনিয়ম ও ঘুষের শিকার হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, উচ্চমান সহকারী রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে একটি দালালচক্র গড়ে উঠেছে, যা অফিসের সমস্ত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মিরপুর বিআরটিএ অফিসে সরাসরি কাজ করতে গেলে তারা দীর্ঘ ফাইল লাইনে দাঁড়ানো, হয়রানি ও বিলম্বের শিকার হয়। কিন্তু দালালদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থ দিলে কাজ দ্রুত সম্পন্ন হয়। এই দালালচক্রের মূল নেতৃত্বে আছেন উচ্চমান সহকারী রাকিব হোসেন, এবং তার সহায়ক হিসাবে দালাল কাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, অফিসে যেসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয় — যেমন প্রাইভেট মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, মালিকানা বদলি, নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ইঞ্জিন পরিবর্তন, গাড়ি ফিটনেস ও মোটরযান লাইসেন্স নাম্বার — সবই দালাল নিয়ন্ত্রণে চলছে, কিন্তু মূল দায়িত্ব এবং সুবিধা পুরোপুরি রাকিব হোসেনের হাতে। একজন ভুক্তভোগী জানান, “আমরা নিজেরাই কাজ করতে চাইলে শুধু হয়রানি করা হয়। ফাইল বারবার ফেরত দেয়া হয়। দালালদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থ দিলে কাজ হয়।

রাকিব হোসেনের নির্দেশে এই সমস্ত কাজ পরিচালনা করছে।” অভিযোগ অনুযায়ী, মিরপুর বিআরটিএ অফিসের ভিতরে (রুম ১১৬) সমস্ত আর্থিক লেনদেন ও ঘুষের আদান-প্রদান রাকিব হোসেনের তত্ত্বাবধানে চলছে, আর দালালরা এই লেনদেনে মধ্যস্থতা করছে। সাধারণ মানুষকে তাদের কাজ সম্পন্ন করতে হলে দালালের মাধ্যমে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের মতে, রাকিব হোসেন এই সিন্ডিকেট কেবল ঘুষ আদায় নয়, বরং অফিসের সমস্ত কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তারও করছে। এটি প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে গুরুতর চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। একজন স্থানীয় নাগরিক বলেন, “দালালদের মাধ্যমে না গেলে আমাদের কাজ হয় না। অফিসে গেলে শুধু হতাশা আর হয়রানি।

রাকিব হোসেন নিজেই নিশ্চিত করেন যে, কেউ তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে কাজ করতে না পারে। দালালের এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করছে।” ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দালালদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট রেটের ভিত্তিতে কাজ সম্পন্ন হয় এবং অর্থ ভাগাভাগি করা হয়। সাধারণ মানুষ যারা সরাসরি কাজ করতে আসে, তারা রাকিব হোসেনের নির্দেশে দেরি ও হয়রানির মুখোমুখি হন। আবার দালালদের মাধ্যমে আসা ব্যক্তিদের কাজ দ্রুত সমাধান হয়। অফিসে দেখা যায়, সকাল থেকে সাধারণ মানুষ ফাইল জমা দেয়, কিন্তু দুপুর পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয় না। এক্ষেত্রে দালাল হিসেবে মধ্যস্থতা করছেন এবং তাদের মাধ্যমে কাজের সুবিধা মূলত রাকিব হোসেনের নিয়ন্ত্রণাধীন।

একজন আইনজীবী ও নাগরিক অধিকার কর্মী বলেন, “সরকারি অফিসে এই ধরনের দালাল চক্র ও ঘুষের মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করা পুরো প্রশাসনিক কাঠামোর প্রতি আস্থা কমায়। রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে দালালরা এই অনিয়ম চালাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” সংক্ষেপে, মিরপুর বিআরটিএ অফিসে চলমান ঘুষ-দালাল সিন্ডিকেট ও সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার সব দায় উচ্চমান সহকারী রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে দালালচক্রের ওপরেই পড়ে। ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে দাবি করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে দালাল চক্র বন্ধ করা হোক এবং সাধারণ মানুষ ন্যায্য সেবা পেতে পারে। একজন স্থানীয় নাগরিক বলেন, “আমরা চাই, রাকিব হোসেন নিজে এবং তার দালাল অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। তখনই সাধারণ মানুষ ন্যায্যভাবে অফিসের সেবা পাবে।” মিরপুর বিআরটিএ অফিসের এই সমস্যা দীর্ঘদিন সমাধান না হলে, শুধুমাত্র জনগণের অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে না, বরং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, নেতৃত্বাধীন এই ঘুষ-দালাল সিন্ডিকেট অবিলম্বে বন্ধ করা জরুরি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ