আওয়ামী স্টাইলে লুটপাট, নতুন কমিটির জন্য বড় অংকের লেনদেন
সমবায় আইন লঙ্ঘন করে মিল্ক ভিটায় আবারও এডহক কমিটির তোড়জোড় হাইকোর্টের নির্দেশনা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৮-১১-২০২৫ ১১:৩৭:১২ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
০৮-১১-২০২৫ ১১:৩৭:১২ পূর্বাহ্ন
সমবায় আইন লঙ্ঘন করে মিল্ক ভিটায়
বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড বা মিল্ক ভিটায় আবারও অবৈধ প্রক্রিয়ায় এডহক কমিটি গঠনের তোড়জোড় চলছে। নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার জাহিরুল আলিমের নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান কমিটি তাদের নিয়োগের একমাত্র শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাছাড়া এই কমিটি ইতিমধ্যে দুর্নীতিবাজ বলেও চিহ্নিত হয়েছে। চেয়ারম্যান কমান্ডার (অব) জাহিরুল আলিমসহ কমিটির সদস্যরা সেই একই আওয়ামী স্টাইলেই দুর্নীতি-লুটপাটে নেমে পড়েছেন দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই। সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজ ও শীর্ষনিউজ ডটকম-এ প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে তাদের এসব দুর্নীতি-অপকর্মের সুনিদিষ্ট তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আওয়ামী ধারায় অন্তর্বর্তী সরকারের এই কমিটিও একইভাবে দুর্নীতি-অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার কারণেই মূলত মিল্ক ভিটা ধ্বংসের হাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। অথচ এই একই কমিটিকে আবারও নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা এবং সমবায় আইন অনুযায়ী যদিও এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। অবৈধ প্রক্রিয়ায় একই কমিটিকে পুনরায় নিয়োগ দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকার লেনদেনও হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এই টাকার সিংহভাগ ঢুকেছে উপদেষ্টার পকেটে এবং বাকিটা পেয়েছেন উপদেষ্টার পিএস আবুল হাসান এবং মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্বে বর্তমান (মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া) কমিটিতে মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন। তিনিই মূলতঃ মিল্ক ভিটা সংশ্লিষ্ট এসব অপকর্মে নাটের গুরু হিসেবে কাজ করছেন, দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিনা ভোটেই সমবায়ীদের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটায় ব্যবস্থাপনা কমিটি দেয়া হয়। বিগত আওয়ামী আমলে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত এক নাগাড়ে প্রায় ৯ বছর মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনার চাচা শেখ নাদির হোসেন লিপু। শত শত কোটি টাকা লুট হয়েছে এই শেখ নাদির হোসেন লিপুর নেতৃত্বে। ২০১৫ সালে লিপু অনেকটা জোর করেই মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান পদ দখল করেন। সেই থেকে গত ৫ আগস্ট হাসিনার পতন পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর জোরপূর্বক পদে বহাল থেকে লাগামহীন লুটপাট চালিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। কোনো বিধি-বিধান, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেননি। শেখ নাদির হোসেন লিপুর নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেটের লুটপাটের কারণে সরকারি এই লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন রসাতলে গিয়ে পৌঁছেছিল। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার আসার কয়েক মাস পর গত ৫ ডিসেম্বর ১২০ দিনের জন্য বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্ক ইউনিয়ন বা মিল্ক ভিটা) ছয় সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি (অ্যাডহক) গঠন করা হয়। নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার জাহিরুল আলিমকে সভাপতি করে গঠিত এই অ্যাডহক কমিটিকে একমাত্র শর্ত দেয়া হয়েছিল নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। কিন্তু তা পূরণে কমিটি ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু নিজেরা দুর্নীতি-লুটপাটে নেমে পড়েছেন। তারপরও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে একই কমিটিকে দ্বিতীয় দফায় ১২০ দিনের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। এই কমিটিরও মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত ২ আগস্ট। তবে এর আগে থেকেই নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির মতোই অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ আরো তিন বছর বাড়ানোর ‘আবদার’ করেছেন মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি জাহিরুল আলিম। ১২ সদস্যের প্রস্তাবিত কমিটির পক্ষে সমবায় অধিদফতরে সুপারিশ করেছেন মিল্ক ভিটার এমডি (যুগ্মসচিব) দুর্নীতিবাজ জাহিদুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে সমবায় অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের কাছে এই কমিটির অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেছেন বলে জানা যায়। এই কমিটি যাতে এক নাগাড়ে তিন বছরের জন্য পাওয়া যায়, এ লক্ষ্যেই জাহিরুল আলিমসহ প্রস্তাবিত কমিটির সদস্যরা বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। নতুন এই প্রস্তাবিত কমিটিতে এমন একাধিক লোককেও রাখা হয়েছে যারা ইতিপূর্বে নকল দুধ সরবরাহ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন এবং ফৌজদারি মামলাও হয়। এছাড়া জাহিরুল আলিমসহ প্রস্তাবিত এই কমিটির প্রায় সকল সদস্যই বিতর্কিত এবং দুর্নীতিবাজ বলে চিহ্নিত।
গত ২৭ জুলাই মিল্ক ভিটার প্যাডে কমান্ডার জাহিরুল আলিম কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত কমিটির চতুর্থ সভায় বিগত ২৬ জুলাই সমিতির বিশেষ সাধারণ সভা ও নির্বাচন-২০২৫ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী কার্যক্রমও শুরু করে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন ও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নং-৯৭৯৪/২০২৫) দায়ের হয়। আদালতের আদেশে কেন্দ্রীয় সমিতির মাধ্যমে নির্বাচন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। একইসাথে ৪৪টি রিট আবেদনকারী সমিতিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে মিল্ক ইউনিয়নের লিভ টু আপিলের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক ফারাহ মাহবুব গত ২৩ জুন হাইকোর্টের রিট পিটিশনের আদেশকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন এবং একই দিন চূড়ান্ত শুনানির সময় বেঁধে দেন। তবে, গত ৪ আগস্ট এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান মিল্ক ভিটা সংশ্লিষ্টরা।
এই সুযোগে জাহিরুল আলিমসহ তাঁর সিন্ডিকেটের সদস্যরা দীর্ঘ মেয়াদে এডহক কমিটি বাগিয়ে নেয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন। জাহিরুল আলিম সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক বরাবর দেয়া ওই আবেদনে তিন বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, মিল্ক ভিটার চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যেতে পারে বলে মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ মনে করে। জাহিরুল আলম নিজের জন্য এ ধরনের সুপারিশ করতে পারেন কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের (সিভিল পিটিশন নম্বর হলো ১৬৪২ /২০১৫) নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচিত কমিটি ছাড়া অনির্বাচিত কমিটিকে বারবার নিয়োগ দেয়া যাবে না বা বর্ধিত করা যাবে না। সমবায় আইনেও অনির্বাচিত কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি বা পুনরায় নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে নিষেধ করা আছে। সমবায় ইউনিয়ন পরিচালিত হবে নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে- এটাই সমবায় আইনের মূল ভিত্তি। আর এ কারণেই কখনো সামায়িক সময়ের জন্য অনির্বাচিত বা এডহক কমিটি গঠিত হলেও ওই কমিটিকে একমাত্র শর্ত দেয়া থাকে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এ দিকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব এবং সমবায় অধিদফতরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক বরাবর উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো: গোলাম হাসনায়েন। পাবনার বেড়ার হারিয়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মো: শাহীন রেজা সরদারের পক্ষে তিনি এই নোটিশ দেন। এতে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন ১৬৪২/২০১৫-এ নির্দেশনা আছে যে, নির্বাচিত কমিটি ছাড়া অনির্বাচিত কমিটিকে বারবার নিয়োগ দেয়া যাবে না বা বর্ধিত করা যাবে না।
তিনি গণমাধ্যমকে জানান, সমবায় আইনের ২২ (৯) ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে অন্তর্বর্তী কমিটি যদি ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে ওই কমিটির পরিবর্তে নতুন অন্তর্বর্তী কমিটি দিতে হবে। আইনের সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সরকার কমিটিকে আবার নিয়োগ দিতে ইচ্ছুক হওয়া আদালত অবমাননার শামিল এবং বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করেন তিনি।
প্রস্তাবিত কমিটির বিতর্কিত সদস্যরা এবং তাদের অতীত অপকর্ম
জেড ওয়াই খান মজলিশ: তিনি সদস্য, শাহজাদপুর দত্তপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ হিসেবে আছেন বলে দাবি করছেন। এটা দেখিয়েই তাকে বর্তমান কমিটিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু আদতে তিনি এ সমিতির সদস্য ছিলেন না। গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ এর পর তিনি নতুন সদস্য হয়েছেন। শাহাজাদপুর দত্তপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমিতি লি.- এ তার নিজস্ব কোন খামার নেই। বিগত বছরগুলোর অডিট রিপোর্ট সমবায় অধিদপ্তরে খতিয়ে দেখলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে। মেয়াদ শেষ হওয়া উক্ত কমিটির মধ্যে চেয়ারম্যান, জেড ওয়াই খান মজলিশ ও নোভেল আক্তার বদলি বাণিজ্য ও দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীদের বদলি এবং চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাসে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের দৈনিক হাজিরা ভাতা বাড়ানোর কথা বলেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্রটি। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যে। জেড ওয়াই খান মজলিশ পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ব্যাপকহারে ভেজাল দুধ মিশ্রণের ঘটনায় ধরা পড়েন। ২০-০৪-২০২৫ইং সন্ধায় দত্তপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ-এর ৫৭৬ লিটার দুধ ভেজাল বেশী মাত্রায় পাওয়ায় দুধ ফেরত দেয় মিল্কভিটা কৃর্তক। যে কারণে মিল্ক ভিটা খামারের সুনাম নষ্ট হয় এবং অনেক টাকার ক্ষতি হয়।
শ্রী সাধন গোপ: সদস্য, সরদার পাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ জামালপুর, ময়মনসিংহ হিসেবে আছেন তিনি। তিনি দুধ সংগ্রহ ও তৈরি করে মিল্ক ভিটার চারটি কারখানায় দুধ সরবাহ করেন। কিন্তু তাঁর বেশিরভাগ দুধই নকল বা ভেজাল বলে ইতিপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে। ভেজাল দুধ সরবরাহ করার কারণে ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি ফৌজদারি মামলাও দায়ের বলে প্রমাণাদি রয়েছে।
প্রশান্ত ঘোষ: সদস্য, তালা কেন্দ্রীয় দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ সাতক্ষীরা, খুলনা হিসেবে আছেন তিনি। তার নিজস্ব খামার আছে এবং বাইরে থেকেও দুধ সংগ্রহ করে মিল্ক ভিটার দুই কারখানা ও মিষ্টির দোকানে সরবরাহ করেন তিনি। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপুর দুর্নীতি-লুটপাটের সহযোগী হিসেবে পরিচিত মিল্ক ভিটায়।
মিজানুর রহমান: সদস্য, পীরগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ, রংপুর হিসেবে আছেন তিনি। তবে তিনি প্রতারক প্রকৃতির লোক হিসেবে পরিচিত মিল্ক ভিটায়। ১০০০ লিটারের ১টি মিল্ক সিলার মেশিন আছে তার। তিনি নকল দুধ তৈরি করেন। বিভিন্ন জনের নিকট থেকে দুধ সংগ্রহ করে ভেজাল দুধ মিশ্রণ করেন। নিজে প্রসেসিং করেন। মিল্ক ভিটায় এসব দুধ সরবরাহ করেন। তার নিজের কোন খামার নেই। চেয়ারম্যান এবং নোভেল আক্তার এর মাধ্যমে মিল্ক ভিটা থেকে ১৫ লাখ টাকা “গাভি ঋণ” নিয়ে বাড়িতে নিজের ভবন নির্মাণ করেছেন। আসন্ন কমিটিতে পরিচালক/সদস্য হওয়ার জন্য বড় অঙ্কের টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে জানা যায়।
রুবি আক্তার: সদস্য, চরলক্ষা, শিকলবাহা প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ কর্ণফুলী, চট্টগাম হিসেবে আছেন তিনি। তাঁর স্বামী নাজিম উদ্দিন আওয়ামী লীগ আমলে মিল্ক ভিটার পরিচালক পদে ছিলেন। নাজিম উদ্দিন প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপুর অন্যতম সহযোগী হিসেবে দুর্নীতি-লুটপাটের মাধ্যমে মিল্ক ভিটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। নাজিম উদ্দিন আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবেও পরিচিত। আওয়ামী লীগ আমলে নাজিম উদ্দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটকালে বরাবরই লাঠিয়ালি বাহিনী নিয়ে মিল্ক ভিটায় ব্যস্ত থাকতেন। এ সংক্রান্ত ছবিসহ বিভিন্ন প্রমাণাদিও রয়েছে। শেখ হাসিনা পালানোর পরে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ নাজিম উদ্দিনকে হত্যা মামলার আসামী হিসেবে গ্রেফতার করে। পরে তিনি বড় অংকের টাকা ব্যয় করে জামিনের ব্যবস্থা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু ও ভাইস চেয়ারম্যান সামছুল আরেফিন প্যাটেলের সঙ্গে নাজিম উদ্দিনও আসামী। বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কমান্ডার জাহিরুল আলিম আওয়ামী এই ক্যাডার নেতার স্ত্রীকে পরিচালক বানানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স