আটাবের বাতিল কমিটির আর্থিক
আটাবের বাতিল কমিটির আর্থিক অসঙ্গতির প্রমাণ মিলেছে
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৮-১১-২০২৫ ১২:২৭:০৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৮-১১-২০২৫ ১২:২৭:০৭ অপরাহ্ন
আটাবের বাতিল কমিটির আর্থিক
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) বাতিল হওয়া কার্যনির্বাহী কমিটির আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছেন সংগঠনটির সরকার নিযুক্ত প্রশাসক। তদন্তে সদস্যদের কাছ থেকে সংগৃহীত ফ্যাম ট্রিপের অর্থের অপব্যবহার এবং সংবিধানের বিধান অমান্য করে বড় অংকের নগদ উত্তোলনের ঘটনা ধরা পড়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) আটাবের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আটাবের সদ্য বিদায়ী প্রশাসক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বির আহমেদ গত ২২ অক্টোবর এক চিঠিতে জানান, আটাবের দায়িত্ব গ্রহণের পর আর্থিক লেনদেনে একাধিক অনিয়মের বিষয়টি খুঁজে পান।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯১ জন সদস্যের কাছ থেকে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা ‘ফ্যাম ট্রিপ’ (ভ্রমণ এজেন্টদের অভিজ্ঞতা বিনিময়মূলক সফর) বাবদ সংগ্রহ করা হয়। অর্থ সংগ্রহের আগে আটাবের ব্যাংক হিসাবে ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬৬ টাকা ছিল।
চিঠিতে মোতাকাব্বীর আহমেদ উল্লেখ করেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে অর্থ ফেরতের আবেদন আসতে থাকে।
চিঠিতে বলা হয়, ৮৪ জন সদস্যকে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল ৪১ লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ টাকা, যা আটাবের হিসাবে পাওয়া যায়নি। কেবল অল্পসংখ্যক সদস্যকেই আংশিক অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ১০ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চারটি আলাদা চেকের মাধ্যমে মোট ৪৫ লাখ টাকা ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে, যা প্রশাসকের ভাষায় আটাবের সংবিধানের ৫৩(ক) ধারা অনুযায়ী ‘অধিকার বহির্ভূত লেনদেন’।
প্রশাসক জানান, দায়িত্ব গ্রহণের সময় আটাবের হিসাবে ৩৪ লাখ ৫ হাজার ৭৯৬ টাকা পাওয়া যায়, যা সংগৃহীত অর্থের তুলনায় অনেক কম। ফলে আটাব এখনও অংশগ্রহণকারীদের পাওনা ফেরত দিতে পারছে না।
আটাবের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ, সাবেক মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এবং সাবেক অর্থসচিব শফিক উল্লাহ নান্টুর বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন সদ্যবিদায়ী প্রশাসক মোতাকাব্বির। চিঠিতে তাদের অবিলম্বে অর্থ ফেরত দিয়ে বিষয়টি সমাধান করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় বৈধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর আগে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আটাবের কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত করে প্রশাসক নিয়োগ দেয়, যাতে সংগঠনটির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনা যায়।
চিঠির অনুলিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের নিকট পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টির ওপর আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ এবং সাবেক নেতৃবৃন্দের কার্যক্রমে বিশ্বাসভঙ্গ বা দায়িত্ব লঙ্ঘন ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, দেশব্যাপী হাজারেরও বেশি ট্রাভেল এজেন্সিকে প্রতিনিধিত্বকারী আটাব বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন খাতের অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন। সাম্প্রতিক অনিয়মের অভিযোগে সংগঠনটির আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে ট্রাভেল ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স