অডিটে ধরা পড়ার পরও বহাল-তবিয়তে!
বিপিসির উপব্যবস্থাপক পদে ঢুকে এখন মহাব্যবস্থাপক বয়স ‘চুরি’ ও ‘ভুয়া’ সনদে
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৯-১১-২০২৫ ০১:২০:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৯-১১-২০২৫ ০১:২০:৪৪ অপরাহ্ন
বিপিসির উপব্যবস্থাপক পদে
বয়স চুরি এবং ভুয়া সনদে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এ চাকরি নিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহাম্মদ মোরশেদ হোসাইন আজাদ। এই বয়স চুরি এবং সনদ জালিয়াতির ঘটনা পরবর্তীতে সরকারের অডিট প্রতিবেদনে নাতেনাতে ধরা পড়ার পরও তার বিরুদ্ধে কোনোই ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো তিনি পদোন্নতিও পেয়েছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বদৌলতে। তিন দফায় পদোন্নতি পেয়ে উপব্যবস্থাপক থেকে হয়েছেন মহাব্যবস্থাপক। বর্তমানে আছেন মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) পদে।
অবাক ব্যাপার হলো, এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, জালিয়াতিতে হাতেনাতে ধরা পড়া মোরশেদ হোসাইনের বিরুদ্ধে কোনোই ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আগের মতোই বহাল-তবিয়তে রয়েছেন তিনি। এমনকি বিপিসি কেন্দ্রীক একটি দুর্নীতিবাজচক্রের ছত্রছায়ায় থেকে মোরশেদ হোসেইনের প্রভাব আগের চেয়েও বেড়েছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক ছাত্র সংগঠন ‘স্টুডেন্টস ফর সোভারেন্টি’র পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ে করা হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর বৃহস্প্রতিবার এই রিট মামলা দায়ের করা হয়।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ বিপিসির উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সময় মোরশেদ হোসাইন আজাদের বয়স ছিল ৩৬ বছর ৪ মাস ২১ দিন, অথচ বিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমা চাওয়া হয়েছিল অনূর্ধ্ব ৩৫ বছর। তাছাড়া অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে গ্লোয়ার ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সনদপত্র দাখিল করা হয়, যা পরবর্তীতে অডিটে ধরা পড়ে। এ বিষয়ে অডিট আপত্তি উঠলেও কোনো তদন্ত হয়নি।
জানা যায়, ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়েছেন। ২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর যমুনা অয়েল কোম্পানির মোংলা ইন্সটলেশনের তৎকালীন ব্যবস্থাপক (পরিচালন) একেএম জাহিদ দুর্নীতির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে দুদকে অভিযোগ করলেও তা যথাযথভাবে তদন্ত হয়নি। মোরশেদ হোসাইন তখন দুদকের ওপর প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত ধামাচাপা দেন।
বয়স জালিয়াতি ও ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ ব্যবহার করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে (বিপিসি) চাকরি নেয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোরশেদ হোসাইন আজাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সম্প্রতি ছয়টি সরকারি দপ্তরে লিগ্যাল (উকিল) নোটিশ পাঠানো হয়। ‘স্টুডেন্টস ফর সোভারেন্টি’র আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহম্মদ আহসান এই নোটিশ পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান বরাবর পাঠানো হয়।
লিগ্যাল নোটিশে মোরশেদ হোসাইন আজাদের চাকরিচ্যুতি, প্রতারণা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাত দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সুপ্রিমকোর্টের হাইকোট বিভাগে রিট দায়ের করেন ‘স্টুডেন্টস ফর সোভারেন্টি’র আহ্বায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হকের আইনজীবী।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স