কায়কোবাদের অব্যাহত দুর্নীতি, প্রশ্নবিদ্ধ করছে সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানকে
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১২-১১-২০২৫ ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১২-১১-২০২৫ ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন
আশরাফুল আলমের
গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের বিশ্বস্ত সহচর ও বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের আস্থাভাজন গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ। তার অব্যাহত দুর্নীতির কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে স্বয়ং গণপূর্ত অধিদপ্তরের অন্যান্য প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা মনে করছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন কায়কোবাদ তার বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে প্রয়োগ করছেন নানারকম কূটকৌশল।
গণপূর্তের দুষ্টচক্রের অন্যতম হোতা মো. কায়কোবাদের অতীত কর্মকাণ্ড ঘেঁটে দেখা যায়, বড় বড় মাফিয়া ঠিকাদারদের সঙ্গে তার সখ্য। তাদের হয়ে কাজ করেন তিনি। তাদের কাছ থেকে পান মোটা অংকের কমিশন। এ কারণেই তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। তার সার্কেলের একাধিক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজ না করেই বিল তুলে নিয়েছেন। এমন তথ্য প্রমাণ বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও সেগুলো তদন্তে আলোর মুখ দেখেনি। নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস কাজ না করে বিল তুলে নেওয়ার পরেও তা মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এমনকি দুদক তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তার বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরাসরি গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। যার দায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে মো.কায়কোবাদও এড়াতে পারেন না। গণপূর্ত অধিদফতর ই-এম বিভাগ-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরেও কাজ না করে বিল তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটা প্রশ্ন নির্বাহী প্রকৌশলী যদি কাজ না করে বিল তুলে নিয়ে যায় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাজটা কি? শুধু বসে কমিশন খাওয়া? না অন্য কিছু?
প্রশ্ন উঠেছে একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর তার বেতন কত? তা বিশ্লেষণ করলেই প্রমাণ হয় তিনি কতটুকু ও নিষ্ঠাবান। মো: কায়কোবাদের বাবার নাম ইউনুস আলী সরকার। জাতীয় পরিচয় পত্র নং-১৯৬৭২৬৯৯০৪০৭২১৬০১। কায়কোবাদ গণপূর্ত ই-এম সার্কেল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ই-এম সার্কেল-২ এ কর্মরত। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের সময় তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ই-এম) গণপূর্ত ই-এম প্লানিং সার্কেলে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিলো। ক্ষমতার জোরে আশরাফুল আলমের ক্যাশিয়ার খ্যাত মো: কায়কোবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়নি। কায়কোবাদ তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ যদি দুদক অনুসন্ধান করতে পারে, ক্ষমতার জোরে আশরাফুল আলমের ক্যাশিয়ার খ্যাত মো: কায়কোবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে তিনি অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। দেশে বিদেশে তার ও পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের বিলাস বহুল ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। ঢাকার ধামরাইতে তার একটি ১০ তলা ফাউন্ডেশন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। গ্রামের বাড়ী শেরপুরে রয়েছে নামে বেনামে অঢেল সম্পদ। কায়কোবাদের গ্রামের বাড়ী শেরপুরে রয়েছে নামে বেনামে অঢেল সম্পদ। পরিবারের ব্যবহারের জন্য রয়েছে লেটেস্ট মডেলের প্রিমিও গাড়ী। তার সার্কেলের সকল কাজের উপর ৪ থেকে ৫ শতাংশ হারে টাকা কমিশন গুনে গুনে নেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। একটি সার্কেলে পুরো অর্থবছরের যত কাজ হয় তার ৫ শতাংশ যদি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পায় তাহলে তার বছরে আয় কত?
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী শামিম আক্তার বলেন, গণপূর্ত কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিবে না। যেই অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তার বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের সত্যতা জানতে প্রকৌশলী কায়কোবাদকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একাধিকবার তত্ত্বাবধায়ক সার্কেল-২ এর অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স