দেশজুড়ে রাতভর ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে অগ্নিসংযোগ
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৭-১১-২০২৫ ০১:৩২:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-১১-২০২৫ ০১:৩২:৩৬ অপরাহ্ন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগের রাতে (রোববার) রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর একের পর এক নাশকতা চালায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এরমধ্যে, ঢাকায় পরিবেশ উপদেষ্টার বাসা ও এনসিপি কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলযোগে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। এ ছাড়া রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারার মোড়ে, মিরপুর ১২ নম্বর মেট্রো স্টেশনের নিচে, রাজধানীর শ্যামপুরে ফ্লাইওভারের ওপরে, দারুস সালাম থানার রোজিনা পেট্রোল পাম্পের পেছনে, মহাখালী, বাড্ডায়, ঢাকার তিতুমীর কলেজের গেটের সামনের রাস্তায়, আমতলী মোড় এলাকায় এবং ফার্মগেটে রেলক্রসিংয়ে চলন্ত ট্রেনে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে, রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। একইসময় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে দুটি পরিত্যক্ত লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করে পালায় দুষ্কৃতিকারীরা।
ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন, কিশোরগঞ্জে গ্রামীণ ব্যাংকের নিচ তলায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শ্রীরামদী এলাকায় এসে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বোমাবাজির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে একের পর এক নাশকতা চালানো হয়।
হাসিনার রায়কে ঘিরে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।’
পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নাশকতা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে রোববার থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে জমায়েত হতে না পারে, সেজন্য সব থানাকে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এর পাশাপাশি রেল ও নৌপথেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং পুলিশ সদস্যরাও সতর্ক রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘যারা মানুষ ও পুলিশ সদস্যদের ওপর ককটেল হামলা ও যানবাহনে আগুন দেবেন, আইনসম্মতভাবেই তাদের ওপর গুলির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেছেন, ‘পুলিশের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো দল বা গোষ্ঠি নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে, পুলিশ দেশ ও জনগণের স্বার্থে তা প্রতিরোধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট এলাকায় ডিএমপি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলেও জানান তিনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স