গ্রেপ্তার এড়াতে ৫ দিন ধরে কর্মস্থলে যাচ্ছেন না স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ভোগান্তিতে রোগীরা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৮-১১-২০২৫ ০৫:৫১:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৮-১১-২০২৫ ০৫:৫২:৩৬ অপরাহ্ন
ডা. মো. জাকির হোসাইন
মারধরের শিকার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার করা মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে গত পাঁচদিন ধরে অফিস করছেন না ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জাকির হোসাইন। সেই সঙ্গে আতঙ্কের মধ্যে নিয়মিত আসছেন না অন্য চিকিৎসক ও নার্সরা। এতে ভর্তি হওয়া রোগী ও আগত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ছাড়াও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগে গত ১২ নভেম্বর একটি মানববন্ধন করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মানববন্ধন চলাকালে কিছু লোকজন হামলা করলে মানববন্ধন পণ্ড হয়ে যায়। ওই সময় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মোজাম্মেল হককে মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া হয়। আহত হন আরো দুজন।
এ ঘটনায় গত ১৪ নভেম্বর মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসাইনকে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পর ডিউটিরত অবস্থায় হাসপাতালের একমাত্র নিরাপত্তাকর্মী শাকিল আহম্মেদকে (৩৮) আটকের পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দুই-একজন চিকিৎসক এলেও অল্প সময় অবস্থান করে চলে গেছেন। সবার মধ্যেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে তালা ঝুলানো।
শিশু, অ্যানেসথেসিয়া, অবস অ্যান্ড গাইনি, অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড সার্জারি ও এনসিডি কর্নার কক্ষে কেউ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, আমরা তো কিছুই জানি না। তারপরও আতঙ্ক নিয়ে আসতে হয়েছে। এভাবে একটা অস্থিরতা নিয়ে কাজ করা যায় না।
ইপিআই-এর মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ইলিয়াস খান বলেন, ১৩ তারিখের পর থেকে আসা হয়নি।
প্রতিদিনই অনেক শিশু আসে টিকা নিতে। তাদের দিকে নজর রেখেই আতঙ্কের মধ্যেই এসেছি। এটার একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসাইন বলেন, এই ঘটনায় অযথা আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর একজনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। তাই মানসম্মানের ভয়ে নিজেকে আড়াল করে রেখেছি। তাছাড়া হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের মধ্যে গ্রেপ্তার-আতঙ্ক বিরাজ করায় তারা আতঙ্কে রয়েছেন। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই কার্যক্রম চালানো হবে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনার ভিডিও ও বিভিন্ন তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন কাউকে আটক করা হবে না। এ বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে আশ্বস্ত করার পরও তিনি অফিস করছেন না।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন ডা. ফয়সল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জেলায় এনে অফিস করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য কার্যক্রম ঠিকমতো চলছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স